শমরিতা,
বন্ধু তুমি কেমন আছো খুশির ইদের এমনি দিনে?
কি পড়েছো, কি খেয়েছো,কি দেখেছো আপন মনে?
পড়েছো কি আজকে তুমি নীল পাড়ের ওই লাল শাড়িটা?
কপালে কি পরেছিলে লাল রঙ এর সেই টিপটা?
ছিলে কি আজ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে বারান্দাটার অন্ধকারে ?
আসবো কখন এ ভাবনায় যেতো তোমার দিন যে বয়ে।
যৌবনের সে রঙ্গীন দিনে স্বপ্ন অনেক মাথায় নিয়ে
হাতেতে হাত রেখে দু'য়ে, যেতো সেদিন এমনি কেটে,
মাইলের পর মাইলটি হেঁটে।
সেই ইদেতে যৌবনেতে ঘুরছি আহা সব খানেতে,
নাও বেয়েছি চৈত্র দিনে গুনগুনিয়ে গান শোনে;
বড় কাটরা,ছোট কাটরা,সায়েস্তা খাঁর সেই বাড়ি
আর নবাব বাড়ির আঙ্গিনাটা সবই ছিল অভিসারে।
তুমি আমি বহুদিনই চলছি হেঁটে রেলের পথে,
চলছি মোরা সমান্তরালে কভু না তার সংযোগ মিলে।
হলো না তো মিলন মোদের অর্ধ শতক গেলো চলে।
জীবন এখন অস্তাচলে,হাঁটতে গেলে ব্যথা লাগে,
চলতে কারো সহায় লাগে।
এখন আমার দিনগুলো সব যাচ্ছে বসে,শুয়ে, জেগে।
ঘরে গিন্নির অনুরাগে নাতিটার দাদা ডাকে,
ছেলেদের অতি যত্নে, খেয়ে পড়ে এ দুনিয়ায়
স্বজনের সান্নিধ্যতে,হাজার বন্ধুর স্নেহডোরে
আছি ভালোই এ ধরাতে,
কাটছে সুখেই দিন যে আমার।
তারই মাঝে দিবস শেষে মন যে আমার সদাই দোলে,
কখন যে তাই উড়ে যাবে প্রাণ পাখিটা খাঁচা ছেড়ে।
এই ভাবনায় কাটছে সকাল,কাটছে দুপুর, কাটছে বিকেল,
কেমন আছি,কোথায় আছি জানছে না তা আপনজনে।
কারো হাতে থাকলে মোবাইল জানে না তা ব্যবহারে।
প্রবীণ বয়সে আঙ্গুলগুলো কেঁপে কেঁপে হেলে দোলে বসে না আর অক্ষরেতে।
সুযোগ হলেও হয় না বলা-
"কেমন আছো বলো তুমি, বলো বন্ধু এ লগনে?"
চারিদিকের কোলাহলে হয়না কথা সংগোপনে।
প্রবীণ বয়সে অনেকেরই এরূপ দশা ঘরে ঘরে।
জানি তোমার দিনগুলো আজ
অসুখ বিসুখ মাথায় নিয়ে সুখে দুখে মিলে মিশে
যাচ্ছে চলে এমনি তরে।
জীবন চক্র এমনিই হয় ক্ষণিকের এ দুনিয়ায়,
এমনি করেই এক দিনেতে শোনবে তুমি এক বেলাতে
কবি তোমার গেছে চলে লক্ষ তারার ওই মেলাতে।
এমনি দিনে তাই বলে যাই,যেথায় থাকো সুখে থেকো তোমার প্রিয়জনের সাথে।
থেকো তোমার নতুন প্রিয় নাতি আর নাতনি নিয়ে।
ওরাই তোমার সুখের আঁধার ওরাই স্বর্গ -সুখের ভান্ডার।
দিবস যামি এমনি হয় বিষাদ আজি হরষে লুকায়,
শুকনো ডালে পাতা গজায় নতুন কূঁড়ি পুষ্প ফোঁটায়।
সুখে থেকো, ভালো থেকো বন্ধু আমার এই দুনিয়ায়।
এমনি দিনে বলবো কি আর শাওয়ালের এই নতুন চাঁদে?
বলবো শুধু সেই সে কথা, আনন্দেরই সেই বারতা,
বন্ধু তোমায় প্রীতির স্মারক
বলবো শুধু- ইদ- মুবারক।
লেখক পরিচিতি :
আবদুর রব শিকদার
( মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্ট লেখক, কবি, সংগঠক এবং সমাজনেতা)
লেখক ঠিকানা: লাকার্তা, ভেদরগঞ্জ, শরীয়তপুর ।
জন্ম: ১৬ আগষ্ট ১৯৪৭ শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নস্থ লাকার্তা গ্রামে। শরীয়তপুর জেলার ইতিহাস- “শরীয়তপুর অতীত ও বর্তমান” এর লেখক। বাংলা সাহিত্যের দীর্ঘতম প্রেমপত্র ইতি তোমারই নাঈম আবদুর রব শিকদার এর অনবদ্য অবদান। ২০২১ সালে ঢাকাস্থ শরীয়তপুর লেখক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ‘অতুলপ্রসাদ সেন-আবু ইসহাক সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায়। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জনাব শিকদার দাদা নাতির মধুর সম্পর্ককে অধিকতর নিবিড় করার লক্ষ্যে গ্র্যান্ড পেরেন্টস ডে সেলিব্রেশন কাউন্সিল বা জিডিসিসি বাংলাদেশ নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।