বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কি?
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ বাংলাদেশের প্রথম ভুস্থির যোগাযোগ ও সম্প্রচার উপগ্রহ। ১১ মে ২০১৮ বাংলাদেশ সময় ১২ মে ২০১৮ তারিখে কেনেডি স্পেস সেন্টার সেন্টার থেকে উৎক্ষেপন করা হয়। ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনকারী দেশের তালিকায় যোগ হয় বাংলাদেশ। প্রস্ততকারক থেলিস এ্যালেনিয়া স্পেস ফ্রান্স।
২২ মে ২০১৮ ঘড়ির কাঁটা রাত ২ টা ১৪ মিনিট ছুঁই ছুঁই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে দেশের কোটি মানুষের চোখ টেলিভিশনের পর্দায় । যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের হ্যান্ডসাইকের কাউন্ট ডাউন এক এ পৌছালে তীব্র আগুনের ঝলকানিতে গতি আর স্বপ্ন নিয়ে মহাকাশের পথে পাড়ি জমায় বাংলাদেশের প্রথম উপগ্রহ “বঙ্গবন্ধু স্যাটেরাইট - ১ স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপন : বঙ্গবন্ধু - ১ স্যাটেলাইট তৈরি হয়েছে ফ্রান্সের থ্যালাস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিতে । স্যাটেলইটের কাঠামো তৈরি , উৎক্ষেপন , ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা , ভূস্তরের দুইটি স্টেশন পরিচালনার দায়িত্ব এ প্রতিষ্টানটির , মহাকাশে উৎক্ষেপনের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট –১ পরি চালনা , সফল ব্যবহার ও বানিজ্যিক কার্র্যক্রমের জন্য সরাসরি মালিকানাধিন “বাংলাদেশের কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড “ নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে , ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালে কেনেডি স্পেস সেন্টারে স্পেস এক্রের লক্ষ প্যাড় থেকে এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হয় । “ফ্যালকল নাইন” নামক রকেটে করে এ স্যাটেলাইট মহাকাশে পৌছে ।
এই রকেটের রয়েছে চারটি অংশ , ও পরের অংশে থাকবে স্যাটেলাইট , তারপর থাকবে অ্যাডাপটার , এরপর স্টেজ – ২ এবং সবচেয়ে নিচে থাকবে স্টেজ -১ । একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর রকেটের স্টেজ -১ খুলে নিচের দিকে নামতে থাকবে , এরপর চালু হারে স্টেজ -২ একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পযন্ত স্যাটেলাইটকে নিয়ে গিয়ে মহাকাশেই থেকে যাবে । দুইটি ধাপে এই উৎক্ষেপন প্রক্রিয়া শেষ হবে । প্রথম ধাপটি হলো লচ্ঞ অ্যান্ড আরলি অরবিট ফেইজ (LEOP) এবং দ্বিতীয় ধাপে হচ্ছে স্যাটেলাইট ইন অরবিট । প্রথম ধাপে ১০ দিন এবং পরের ধাপে ২০ দিন লাগবে । উৎক্ষেপন স্থান থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে যাবে এই স্যাটেলাইট । ৩৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ – ২ খুলে যাবে । স্যাটেলাইট উন্মুক্ত হওয়ার পরপর এর নিয়ন্ত্রন যুক্তরাষ্ট্র , ইতালি এবং কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশনে চলে যাবে । এই তিন স্টেশন থেকে স্যাটেলাইটকে নিয়ন্ত্রন করে এর নিজস্ব কক্ষপথে ১১৯.১ পূব দ্রাঘিমাংশে স্থাপন করা হবে । স্যাটেলাইট সম্পূর্ন চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রন বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশন গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হবে । উপকারিতা : আমাদের দেশে প্রায় ৩০ টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার করছে । এরপর চ্যানেল সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে । সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে এসব চ্যানেলের জন্য বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় । বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন সফল হলে বিপুল পরিমান এই অর্থসাশ্রয় হবে । এ ছাড়া বিদেশে ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনা সম্ভব হবে । বাংলাদেশের দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ হবে । দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা সম্প্রসারন সম্ভব হবে ।