আর কতো কাল গাভিনীর দুগ্ধ পোষ্য হবো আমি,
কতোকাল পাবো পুকুরের শ্রেষ্ঠ মাছটা বেছে নেয়ার অধিকার।
কতো হবো আর সংসারের মুরব্বী জন?
সব কিছুরই আছে সীমারেখা,
আছে মেয়াদ কাল।
বহু লভিলাম এ ধরার রূপ রস গন্ধের আস্বাদ।
আর কতো?
নতুন প্রজন্মের নাতিরা বলে,
"দাদু তুমি ছাড়ো পথ,
চলতে দাও আমায় নির্দ্বিধায়,
যাবো আমি বহুদূর আমার মতো,
তুমি কেন বাধা দাও তাতে? "
হা তাইতো কথা,
কেন পথে দাঁড়াবো তার?
দিনে দিনে বহু পথ হেঁটেছি আমি
এ লোকালয়ে।
দেখেছি ফুলের হাসি,
পাখিদের কলরব,নদির কলতান,
মাঝির গুনটানা,পদ্মফুলে ফড়িং এর চুমো,
ষোড়শীর মায়া হরিণ চোখ,
নিস্পাপ শিশুদের ছুটাছুটি,
করেছি ভোগ প্রেয়সীর উজার প্রেম
আর জল ছল ছল চোখের তৃষিত চাহনি,
বুঝেছি তার মনের ভাষা।
আরো কত কি?
চলতে চলতে জীবন তরীখানা
এসে গেছে তীরে
গভীর সমুদ্র যাত্রা অবসান করে।
কথায় কথায় বয়স আমার এসে গেছে
পৌনে শত বছরের পানে।
অসুখ বিসুখ সেতো নিত্য সহচর
তারই মাঝে ছুটি আমি সূর্যাস্তের আহবানে।
কত দিন আর কত দিন এ ধরার
সুখ লাভ করব আমি,
তারই দিনক্ষণ আমি গণি নিরবধি।
বন্ধুরা অনেকেই চলে গেছে ওপারে,
"করিস কি তুই এখনও ওখানে?
চলে আয় খেলি মোরা সেই গোল্লাছুট আর লুকোচুরি এখানে।তুই এলেই জমবে মেলা
হবে খেলা মধুময়।"
তাদের ডাকে আছি বসে কবে আমি যাব সেথা।
ছিয়াত্তরে পা ফেলার এ সোনালী প্রাতে
কেন জাানি মন আমার শুধু বলে
হে মহা জীবন, সালাম তোমায়।
পহেলা ভাদ্র,১৪২৯ বঙাব্দ।
১৬ আগষ্ট, ২০২২ খৃষ্টাব্দ।
আবদুর রব শিকদার
( মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্ট লেখক, কবি, সংগঠক এবং সমাজনেতা)
লেখক ঠিকানা: লাকার্তা, ভেদরগঞ্জ, শরীয়তপুর ।
জন্ম: ১৬ আগষ্ট ১৯৪৭ শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নস্থ লাকার্তা গ্রামে। শরীয়তপুর জেলার ইতিহাস- “শরীয়তপুর অতীত ও বর্তমান” এর লেখক। বাংলা সাহিত্যের দীর্ঘতম প্রেমপত্র ইতি তোমারই নাঈম আবদুর রব শিকদার এর অনবদ্য অবদান। ২০২১ সালে ঢাকাস্থ শরীয়তপুর লেখক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ‘অতুলপ্রসাদ সেন-আবু ইসহাক সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায়। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জনাব শিকদার দাদা নাতির মধুর সম্পর্ককে অধিকতর নিবিড় করার লক্ষ্যে গ্র্যান্ড পেরেন্টস ডে সেলিব্রেশন কাউন্সিল বা জিডিসিসি বাংলাদেশ নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।